এই দুই পক্ষের একটিকে বেছে নেওয়ার জন্য সারা বিশ্বের বুর্জোয়ারা আমাদের আহ্বান জানাচ্ছে। ইসরায়েলি নিপীড়নের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের প্রতিরোধের জন্য অথবা ফিলিস্তিনি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি প্রতিক্রিয়াকে সমর্থণের জন্য এই আহ্বান । প্রত্যেকেই যুদ্ধকে ন্যায়সঙ্গত করার জন্য একে অপরের বর্বরতার নিন্দা করে চলে। ইসরায়েলি রাষ্ট্র কয়েক দশক ধরে অবরোধ, হয়রানি, চেকপয়েন্ট এবং অপমান দিয়ে ফিলিস্তিনি জনগণের উপর নিপীড়ন চালিয়ে আসছে, তাই তাদের প্রতিশোধ বৈধ হবে এইরকম যুক্তি দিয়ে ফিলিস্তিনি সংগঠনগুলো ছুরিকাঘাত ও বোমাহামলা চালিয়ে নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করতে শুরু করেছে। একে অপরের রক্ত ঝরানোর যুক্তিকে সামনে আনছে।
হনন-জীঘাংসার এই ভয়ঙ্কর যুক্তিই আসলে সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধের যুক্তি। আমাদের শোষকশ্রেণি তথা রাষ্ট্রশক্তি সবসময় নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় নির্দয় যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে যুক্তির আমদানি করে। আর আমরা শ্রমিকশ্রেণি, যারা শোষিত, তারা সবসময় আমাদের জীবন দিয়ে এর মূল্য পরিশোধ করি।
আমাদের জন্য, সর্বহারাদের জন্য, বেছে নেওয়ার মতো কোনও পক্ষ নেই, আমাদের কোনও স্বদেশ নেই, রক্ষা করার মতো কোনও জাতি নেই! সীমান্তের দু'পাশে, আমরা একই শ্রেণিসম্পর্কের সহোদর! আমরা না ইসরায়েল, না ফিলিস্তিন!
মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের কোন শেষ নেই। সমগ্র বিংশ শতাব্দী ছিল যুদ্ধের এক শতাব্দী। মানব ইতিহাসের সবচেয়ে নৃশংস যুদ্ধগুলি সংঘঠিত হয়েছে এই শতাব্দীতে, এবং এই যুদ্ধগুলির কোনটিও শ্রমিকদের স্বার্থে সংগঠিত হয় নি। আমরা দেখেছি কখনো সেটা "পিতৃভূমি", কখনো "সভ্যতা", কখনো "গণতন্ত্র", এমনকি কখনো "সমাজতান্ত্রিক পিতৃভূমি" (যেমন কেউ কেউ স্ট্যালিন এবং গুলাগের সোভিয়েত ) রক্ষার নামে তাদের শোষকদের স্বার্থে লক্ষ লক্ষ লোককে হত্যা করার জন্য সর্বদা আহ্বান জানিয়ে ছিলো।
আজ মধ্যপ্রাচ্যে আবার এক নতুন যুদ্ধ শুরু হয়েছে। উভয় পক্ষের শাসকশক্তি ইহুদি বা ফিলিস্তিনি নির্বিশেষে শোষিতদের "স্বদেশ রক্ষার" আহ্বান জানাচ্ছে। অথচ ইসরায়েলে ইহুদি শ্রমিকরা ইহুদি পুঁজিপতিদের দ্বারা শোষিত হয় এবং ফিলিস্তিনির শ্রমিকরা একই সাথে ইহুদি পুঁজিপতিদের ও আরব পুঁজিপতিদের দ্বারা শোষিত হয় (এবং প্রায়শই ইহুদি পুঁজিপতিদের তুলনায় আরব পুঁজিপতিরা অনেক বেশি হিংস্র, যেহেতু ফিলিস্তিনি সংস্থাগুলিতে শ্রমআইন এখনও প্রাক্তন উসমানীয় সাম্রাজ্যের মতো)।
ইহুদি শ্রমিকরা ১৯৪৮ সাল থেকে পাঁচটি যুদ্ধের শিকার হয়েছে। বুর্জোয়াদের যুদ্ধ উন্মাদনার জন্য ইতিমধ্যে তাদের ভারী মূল্য দিতে হয়েছে। বিশ্বযুদ্ধে বিপর্যস্ত ইউরোপের কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প এবং ঘেটোর ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা থেকে বেরিয়ে আসা শ্রমজীবী মানুষের উত্তরসূরীরা পরে ইসরায়েল ও আরব দেশগুলোর মধ্যে যুদ্ধে সাহালের (ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী) ইউনিফর্ম পরছেন। আমরা দেখেছি, '৬৭, '৭৩ ও '৮২ সালের যুদ্ধে তাদের বাবা-মা রক্তের মূল্য পরিশোধ করেছেন। এই সৈন্যরা সত্যিই কি এতটা জঘন্য নৃশংস হতে চায়, যাদের একমাত্র চিন্তা হবে ফিলিস্তিনি শিশুদের হত্যা করা ? তারা সবাই তরুণ সৈন্য, যাদের অধিকাংশই শ্রমিক, তারা পুলিশ হিসেবে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছে এবং তাদের মাথা আরবদের "বর্বরতা" সম্পর্কে প্রচারণায় ভরে গেছে।
ফিলিস্তিনি শ্রমিকরাও এরই মধ্যে রক্তের ভয়াবহ মূল্য পরিশোধ করেছে। ১৯৪৮ সালে তাদের নেতাদের দ্বারা পরিচালিত যুদ্ধের দ্বারা তাদের বাড়িঘর থেকে বিতাড়িত হয়ে, তারা তাদের জীবনের বেশিরভাগ সময় কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে কাটিয়েছে, ফাতাহ, পিএফএলপি বা হামাস মিলিশিয়াদের সাথে কিশোর বয়সে যুক্ত হয়েছে।
ফিলিস্তিনিদের উপর সবচেয়ে বড় গণহত্যা ইসরাইলের সেনাবাহিনী দ্বারা সংঘটিত হয়নি, বরং জর্ডান এবং লেবাননের মতো যেসব দেশে তাদের পার্ক করা হয়েছিল: ১৯৭০ সালের সেপ্টেম্বরে ("ব্ল্যাক সেপ্টেম্বর") "লিটল কিং" হুসেইন তাদের গণহারে হত্যা করেছিলেন, এমন পর্যায়ে যেখানে তাদের কেউ কেউ মৃত্যু থেকে বাঁচতে ইসরায়েলে আশ্রয় নিয়েছিল। ১৯৮২ সালের সেপ্টেম্বরে, আরব মিলিশিয়ারা (স্বীকৃতভাবে খ্রিস্টান এবং ইসরায়েলের মিত্র) বেইরুটের সাবরা এবং শাতিলা শিবিরে তাদের গণহত্যা করেছিল।
জাতীয়তাবাদ এবং ধর্ম, শোষিতদের জন্য বিষ । আজ, "ফিলিস্তিনি মাতৃভূমি" এর নামে, আরব শ্রমিকদের আবারও ইসরায়েলিদের বিরুদ্ধে একত্রিত করা হচ্ছে, যাদের বেশিরভাগই হচ্ছে ইসরায়েলি শ্রমিক, সেই তাদেরকেই "প্রতিশ্রুত ভূমি" রক্ষায় আত্মাহূতি দিতে বলা হচ্ছে।
জাতীয়তাবাদী প্রোপাগান্ডা উভয় দিক থেকে ঘৃণ্যভাবে প্রবাহিত হয়, মনকে অসাড় করে তোলে । মানুষকে হিংস্র পশুতে পরিণত করার জন্য এই প্রোপাগান্ডা ডিজাইন করা হয়। ইসরায়েলি এবং আরব বুর্জোয়ারা অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময় ধরে এটিকে উত্তেজিত করে চলেছে। ইসরায়েলি এবং আরব শ্রমিকদের ক্রমাগত বলা হয়েছে যে তাদের অবশ্যই পূর্বপুরুষদের ভূমি রক্ষা করতে হবে। সমাজব্যবস্থার মধ্যেই একটা নিয়মতান্ত্রিক সামরিকীকরণের পদ্ধতি "ভাল সৈন্যে" নির্মাণের একটি সাইকোসিস তৈরি করেছে। নিজের বাসস্থান খুঁজে নেওয়ার জন্য ইস্রায়েলের সাথে যুদ্ধ করার আকাঙ্ক্ষাকে জাগ্রত করা হয়েছে । সেইসব দেশের নেতারাই এই আকাঙ্খাকে জাগ্রত করছে যে সব দেশের নেতারা তাদের নাগরিকদের অনেককেই কয়েক দশক ধরে কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে রেখেছিলেন।
বুর্জোয়াদের উদ্ভাবিত সবচেয়ে খারাপ মতাদর্শগুলির মধ্যে একটি জাতীয়তাবাদ। এটা সেই মতাদর্শ যা শোষক ও শোষিতদের মধ্যে শত্রুতা ঢাকতে দেয়, তাদের সবাইকে একই পতাকার আড়ালে একত্রিত করতে দেয়, যার জন্য শোষকদের সেবায়, শাসক শ্রেণীর স্বার্থ ও সুযোগ-সুবিধা রক্ষায় শোষিতদের হত্যা করা হয়।
সবকিছুর মুকুট পরানোর জন্য, এই যুদ্ধে ধর্মীয় প্রচারণার বিষ যুক্ত করা হয়েছে, যা এই পরিস্থিতে আরো নিষ্ঠুর ধর্মান্ধতা তৈরি করেছে। ইহুদির আহ্বান জানানো হচ্ছে তাদের রক্ত দিয়ে সলোমনের মন্দিরের প্রাচীর রক্ষা করতে। মুসলমানদের আহ্বান জানানো হচ্ছে ওমর মসজিদ এবং ইসলামের পবিত্র স্থানগুলির জন্য তাদের জীবন উৎসর্গ করতে । ঊনিশ শতকের বিপ্লবীরা ধর্ম সম্পর্কে যেটা বলেছিলেন, ‘জনগণের আফিম’ সেটা ইসরাজিল ও ফিলিস্তিনে এখন বেশি করে প্রমাণিত হচ্ছে। ধর্মের উদ্দেশ্য হচ্ছে শোষিত ও নিপীড়িতদের সান্ত্বনা দেওয়া। যাদের জন্য পৃথিবীতে জীবন জাহান্নাম, তাদের বলা হয় যে তারা তাদের মৃত্যুর পরে সুখী হবে যদি তারা জানে কিভাবে তাদের পরিত্রাণ অর্জন করতে হয়। এবং এই পরিত্রাণ ত্যাগ, আত্মসমর্পণ, এমনকি "পবিত্র যুদ্ধের" সেবায় তাদের জীবন উৎসর্গ করার বিনিময়ে বিনিময় করা হয়।
একবিংশ শতাব্দীর শুরুতে, প্রাচীনকাল বা মধ্যযুগের মতাদর্শ এবং কুসংস্কারগুলি এখনও মানুষকে তাদের জীবন উৎসর্গ করার জন্য পরিচালিত করার জন্য ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। মধ্যপ্রাচ্য এবং বিশ্বের অন্যান্য অনেক অংশের মানুষেরা এখনো এর মধ্যে গভীরভাবে নিমজ্জমান।
পৃথিবীর বৃহৎ শক্তিগুলো এই যুদ্ধের জন্য দায়ী। বৃহৎ শক্তির নেতারাই এমন এক নারকীয় পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছেন, যেখানে এই অঞ্চলের হাজার হাজার শোষিত মানুষ মারা যাচ্ছে। ইউরোপীয় বুর্জোয়ারা, বিশেষত ব্রিটিশ বুর্জোয়ারা ১৯১৭ সালের "বালফোর" ডিক্লিয়ারেশনের মধ্য দিয়ে তাদের তাদের ‘বিভক্ত ও জয়’ করার নীতিকে চরিতার্থ করার জন্য ফিলিস্তিনে একটি "ইহুদি আবাস" তৈরির অনুমতি দিয়েছিল। এই ভাবে জায়োনিজমের আধিপত্যবাদী ইউটোপিয়াগুলিকে উৎসাহিত করা হয়েছিল। এই একই বুর্জোয়ারা যারা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের জিতেছিল, তারা মধ্য ইউরোপীয় ইহুদিদের শিবির ছেড়ে তাদের মূল অঞ্চল থেকে দূরে বিতারিত করার পর ফিলিস্তিনে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেছিল। এর অর্থ হ'ল তাদের নিজেদের বাসভূমিতে নিয়ে যেতে হবে না।
এই একই বুর্জোয়ারা, প্রথমে ব্রিটিশ এবং ফরাসি, তারপর আমেরিকান বুর্জোয়ারা, যারা স্নায়ুযুদ্ধের সময় এই অঞ্চলে পশ্চিমা ব্লকের নেতৃত্বের ভূমিকা দেওয়ার জন্য ইস্রায়েল রাষ্ট্রকে দাঁত পর্যন্ত সশস্ত্র করেছিল, যখন সোভিয়েত ইউনিয়ন তার পক্ষে তার আরব মিত্রদের যতটা সম্ভব সশস্ত্র করেছিল। এই মহান "পৃষ্ঠপোষক" ছাড়া, 1956, 67, 73 এবং 82 এর যুদ্ধগুলি ঘটতে পারত না।
আজ লেবানন, ইরান এবং সম্ভবত রাশিয়ার বুর্জোয়ারা হামাসকে অস্ত্র দিয়ে সমৃদ্ধ করছে। যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি ভূমধ্যসাগরে তাদের বৃহত্তম বিমানবাহী রণতরী পাঠিয়েছে এবং ইসরায়েলে নতুন অস্ত্র সরবরাহের ঘোষণা দিয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, সমস্ত বৃহৎ শক্তি এই যুদ্ধ এবং এই গণহত্যায় কমবেশি প্রত্যক্ষভাবে অংশ নিচ্ছে!
এই নতুন যুদ্ধ পুরো মধ্যপ্রাচ্যকে চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলার দিকে ঠেলে দিচ্ছে! বিশ্বের এই প্রান্তকে শুধু শোকের মধ্যে নিমজ্জিত করার জন্য রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ এটা নয়, সংগঠিত হত্যাকাণ্ডের মাত্রা ইঙ্গিত দিচ্ছে যে বর্বরতা একটি নতুন স্তরে পৌঁছেছে: তরুণরা মেশিনগান নিয়ে একটি উত্সবে নাচছে, প্রকাশ্য রাস্তায় পয়েন্ট-ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে নারী ও শিশুদের হত্যা করা হচ্ছে। অন্ধ প্রতিশোধের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করা ছাড়া আর কোনও উদ্দেশ্য নেই, পুরো জনগোষ্ঠীকে ধ্বংস করার জন্য বোমার কার্পেট বেছানো হয়েছে। গাজার ২০ লাখ মানুষ জল, বিদ্যুৎ, গ্যাস, খাদ্যসহ সবকিছু থেকে বঞ্চিত। এই সমস্ত নৃশংসতার, এই সমস্ত অপরাধের কোনও সামরিক যুক্তি নেই! দু'পক্ষই সবচেয়ে ভয়ংকর ও অযৌক্তিক প্রাণঘাতী ক্রোধে জর্জরিত!
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হচ্ছে: এই প্যান্ডোরার বাক্সটি আর কখনও বন্ধ হবে না। ইরাকের মতো আফগানিস্তান, সিরিয়া ও লিবিয়াতেও আর কখনো 'শান্তিতে ফিরে আসবে না'। পুঁজিবাদ মানবতার বৃহত্তর অংশকে যুদ্ধ, মৃত্যু এবং সমাজের পতনের দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। ইউক্রেনে যুদ্ধ ইতিমধ্যে প্রায় দুই বছর ধরে চলছে এবং অন্তহীন হত্যাযজ্ঞে নিমজ্জিত। নাগোর্নো-কারাবাখেও গণহত্যা চলছে। ইতিমধ্যে প্রাক্তন যুগোস্লাভিয়ার দেশগুলির মধ্যে একটি নতুন যুদ্ধের হুমকি রয়েছে। পুঁজিবাদ হচ্ছে যুদ্ধ!
যুদ্ধের অবসান ঘটাতে হলে পুঁজিবাদকে উৎখাত করতে হবে।
সকল দেশের শ্রমিকদের অবশ্যই যে কোন বুর্জোয়া শিবিরের পক্ষ নিতে অস্বীকার করতে হবে। বিশেষ করে যেসব বাম ও চরম বামপন্থি দলগুলো, নিজেদের শ্রমিকশ্রেণির দল বলে দাবি করে, অথচ 'মাতৃভূমির' অধিকারের জন্য 'ফিলিস্তিনি জনগণের সঙ্গে সংহতি' দেখানোর আহ্বান জানায়, তাদের বাগাড়ম্বরকে অস্বীকার করতে হবে। বোকা বনানোর কৌশলকে অস্বীকার করতে হবে। মনে রাখতে হবে, ফিলিস্তিনি মাতৃভূমি কখনোই শোষকশ্রেণির সেবায় নিয়োজিত বুর্জোয়া রাষ্ট্র ছাড়া আর কিছুই হবে না, তারাও পুলিশ ও কারাগার দিয়ে এই একই জনগণকে নিপীড়ন করবে। সবচেয়ে উন্নত পুঁজিবাদী দেশগুলির শ্রমিকদের সংহতি "ফিলিস্তিনি ও "ইসরায়েলিদের" সেই সমস্ত শ্রমিকদের কাছে পৌঁছায় না যাদের নিজেদের মধ্যে শোষক এবং শোষিতের বিভাজন রয়েছে। এটি ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনের সেইসব শ্রমিক ও বেকারদের কাছে যায় ( যারা তাদের সমস্ত মগজধোলাই সত্ত্বেও ইতিমধ্যে তাদের শোষকদের বিরুদ্ধে সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছে ), ঠিক যেমনটি বিশ্বের অন্যান্য সমস্ত দেশের শ্রমিকদের ক্ষেত্রে যায়। সেটাই হবে শ্রমিকদের সর্বোত্তম সংহতি, যা তাদের মধ্যে জাতীয়তাবাদী বিভ্রমকে উৎসাহিত করবে না।
এই সংহতির অর্থ সর্বোপরি সমস্ত যুদ্ধের জন্য দায়ী পুঁজিবাদী ব্যবস্থার বিরুদ্ধে তাদের লড়াই, তাদের নিজস্ব বুর্জোয়াদের বিরুদ্ধে লড়াই গড়ে তোলা।
বিশ্বব্যাপী পুঁজিবাদকে উৎখাত করে শ্রমিক শ্রেণীকে শান্তি অর্জন করতে হবে, এবং আজ এর অর্থ হল শ্রেণিসচেতন লাইনেই নিজেদের সংগ্রামকে বিকশিত করতে হবে। অপ্রতিরোধ্য অর্থনৈতিক আক্রমণের বিরুদ্ধে শ্রেণিসংগ্রামকে বিকশিত করাটাই কাজ।
জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে, যে শোষকরা শোষিতকে যুদ্ধে সামিল করতে চায় তার বিরুদ্ধে:
সকল দেশের শ্রমিকেরা, ঐক্যবদ্ধ হও!
ICC, 9 October 2023